Make our mind vaster than space

Make our mind vaster than space
Milky Way Galaxy

Wednesday, June 27, 2012

টানা বর্ষণে চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন

টানা বর্ষণে গতকাল চট্টগ্রাম মহানগরের বেশির ভাগ এলাকা ডুবে যায়। বাদুড়তলা থেকে ছবিটি তুলেছেন রাশেদ মাহমুদ


রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম শহরের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা তলিয়ে গেছে। গতকাল সকাল থেকে চট্টগ্রামে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে পণ্য ওঠানামা ছিল বন্ধ। বিকেলে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ গত রাতে ঢাকা ও সিলেটের সঙ্গে চট্টগ্রামের ট্রেন যোগাযোগও বন্ধ হয়ে যায়। পুরো শহরই রাত ১টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কার্যত ছিল বিচ্ছিন্ন। পাহাড় ধসে ও দেওয়াল চাপায় মারা গেছেন অন্তত চারজন। 

নগরের বাকুলিয়া, চান্দগাঁও, আগ্রাবাদ, সিডিএ আবাসিক এলাকা, হালিশহরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গতকাল বিকেল থেকে ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। সন্ধ্যার পর এসব এলাকা পানির সঙ্গে সঙ্গে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। শহরের দুই-তৃতীয়াংশ তলিয়ে যাওয়ায় নগরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় রিকশাই ছিল একমাত্র ভরসা।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে রেকর্ড ৩৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সারা দিনে নগরের প্রধান প্রধান সড়ক, উপসড়ক, অলিগলি ডুবে বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে পানি ঢুকে পড়ে। নগরের বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, চান্দগাঁও, খতিবেরহাট, বাকলিয়া, চাক্তাই, আছদগঞ্জ, আগ্রাবাদ, ট্রাঙ্ক রোড, সিডিএ আবাসিক এলাকা, মোগলটুলী, হালিশহর, এক্সেস রোড, ডিসি রোড, ষোলশহর, চকবাজার, কাতালগঞ্জ, নালাপাড়া, মুরাদপুর, প্রবর্তক, কাপাসগোলা, বাদুড়তলাসহ বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে।
চকবাজারের নাসির কলোনিতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি বাসায় হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়ে আছে বাসিন্দারা। এই বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকা খ্যাত নগরের আসকার দীঘিরপাড়, জামালখান, লালখান বাজারেও পানি উঠেছে। জামালখানের বাসিন্দা সৌমেন দত্ত জানান, ভারী বর্ষণের কারণে নালা ডুবে গিয়ে তাঁদের বাসায় পানি ঢোকে। এতে বাসার আসবাব নষ্ট হয়ে যায়।
গত বৃহস্পতিবার থেকে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়। গতকাল ভোর ছয়টা থেকে টানা বৃষ্টিতে নগরের বিভিন্ন স্থানে পানি উঠতে শুরু করে।
চট্টগ্রাম বন্দর: চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব সৈয়দ ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ জানান, বৃষ্টির কারণে বহির্ণোঙরে ১৩টি জাহাজ থেকে মালামাল খালাস হয়নি। বহির্ণোঙর থেকে বন্দর জেটিতে গতকাল আটটি জাহাজ ভেড়ার কথা ছিল, কিন্তু ভিড়েছে মাত্র চারটি। একটি জাহাজ বন্দর জেটি ছেড়ে গেছে। কনটেইনার জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানামা হয়েছে।
বিমানবন্দর: শাহ আমানত বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক স্কোয়াড্রন লিডার রবিউল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রানওয়েতে পানি উঠে যাওয়ায় বিকেল সাড়ে চারটা থেকে বিমানবন্দর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় রানওয়ের বাতি থেকে পর্যাপ্ত আলো পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার পর পানি নেমে গেলে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। তাতেও স্বাভাবিক হয়ে আসতে অন্তত ছয়-সাত ঘণ্টা তো লাগবেই।’
রেল: রেলওয়ে সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সীতাকুণ্ডের কুমিরা ও ভাটিয়ারী এলাকায় রেললাইন তলিয়ে যায়। ফলে কুমিরা ও ভাটিয়ারীর মাঝামাঝি জায়গায় ৩৪ নম্বর সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকা ও সিলেটের ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। গতকাল সন্ধ্যার পর ঢাকাগামী তূর্ণা ও ঢাকা মেইল ও সিলেটগামী উদয়নের যাত্রা বাতিল করা হয়। একইভাবে ঢাকা ও সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনগুলো চট্টগ্রাম স্টেশনে ভিড়তে পারেনি। 
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী আখতারুজ্জামান হায়দার বলেন, ‘বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সীতাকুণ্ডের কুমিরা ও ভাটিয়ারি স্টেশনের মাঝামাঝি ৩৪ নম্বর রেল সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকা ও সিলেটের রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তাই আমরা সন্ধ্যার পর সব ধরনের ট্রেন চলাচল বাতিল করেছি।’
বিদ্যুৎ: পিডিবির প্রধান প্রকৌশলী রইসউদ্দিন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রবল বর্ষণে সাব-স্টেশন ও বিতরণকেন্দ্রগুলোর যন্ত্রপাতি পানিতে তলিয়ে যায়। নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছি। আরও কিছু এলাকায় ট্রান্সফরমারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।’

Friday, March 2, 2012

অমীমাংসিত রহস্যঃ পিছনে কে?

১৯৬৪ সালের ২৪ মে। জিম টেম্পপেল্টন ছিলেন উত্তর ইংল্যান্ডের একজন দমকল কর্মী। তার মেয়েকে নিয়ে সলওয়ে ফিরথের তৃণভূমিতে যান কিছু ছবি তুলতে। সলওয়ে ফিরথ ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের মধ্যকার একটি জলাভূমি। সেদিন কিছুই ঘটে নাই। যদিও তিনি ও তার স্ত্রী সেখানে অস্বাভাবিক পরিবেশ লক্ষ্য করলেন। বাতাসে ছিল এক অস্বাভাবিকতা। ঠিক যেমন ঝড়ের পূর্বে। কিন্তু আকাশ ছিল মেঘমুক্ত পরিষ্কার। এমনকি কাছের গরুগুলোকেও দুর্বল লাগছিল।

কিছুদিন পর ছবি প্রসেস করে সংগ্রহ করার সময় স্টুডিও মালিক বলল টেম্পপেল্টনের মেয়ে এলিজাবেথের হাতে ফুল ধরা অবস্থায় একটা সুন্দর ছবি এসেছিল। কিন্তু এক বেরসিক লোক পিছন দিক থেকে হেটে এসে নষ্ট করে দিয়েছে। জিম টেম্পপেল্টন বিস্মিত হলেন। ছবি তোলার সময় ওখানে ধারেকাছে কাউকে তিনি দেখেন নি।




কিন্তু সেই ফটোটি দেখে তিনি অবাক এবং হতভম্ব হয়ে গেলেন। সেই ছবিটিতে দেখা গেল একটি রুপালী সাদা জামা- ঠিক নভোচারীদের স্পেস স্যুট পরিহিত এক লোক মেয়েটির মাথার পিছনে ভূমির সাথে কোণ তৈরি করে বাতাসে ভেসে আছে।

ঘটনাটি পুলিশের কাছে রিপোর্ট করা হল। বিখ্যাত ফিল্ম প্রস্তুতকারী কোডাক কোম্পানি ঘটনাটি তদন্ত করে এবং ব্যর্থ হয়। তারা ঘোষণা দেয় এই রহস্যের সমাধানকারীকে তারা আজীবন ফ্রি ফিল্ম সরবরাহ করা হবে।


এর কয়েক সপ্তাহ পর জিম টেম্পপেল্টনের বাসায় দুইজন রহস্যময় ব্যক্তি আসে। তারা জাগুয়ার গাড়িতে আসেন এবং কালো স্যুট পরা ছিল। তারা একজন আরেকজনকে সংখ্যা দিয়ে সম্বোধন করছিল। তারা জিম টেম্পপেল্টনকে ঐ জায়গাতে নিয়ে যায়। সেখানে তারা সেদিনের আবহাওয়া, পাখিদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করল। তারা তাকে স্বীকার করাতে চাপ দিল ঐ লোকটি একজন সাধারণ ব্যাক্তি। এরপর তাকে রেখে চলে গেল। দমকলকর্মীকে ৫ মাইল পায়ে হেটে বাসায় ফিরতে হল।


২০০৮ সালে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে তখন ৮৭ বছরের বৃদ্ধ জিম টেম্পপেল্টন বলেন যে এই ঘটনা আগেও ঘটেছিল। ১৯৬০ সালের ১৫ জুলাই দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার মারালিঙ্গা গ্রামের কাছে পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার সময় ইওএফও এবং একইরকম রুপালী সাদা জামাওয়ালা লোক দেখা যায়। ( দেখুনঃ





)

অস্ট্রেলিয়ার সরকারের সেই সময়ের কিছু গোপনীয় দলিল থেকেও তা পরিষ্কার হয়।




২০১১ সালে ব্রিটিশ সরকার জানায় এই ঘটনা নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই। ( সূত্রঃ http://www.newsandstar.co.uk/features/government-not-doing-enough-to-investigate-sightings-says-cumbrian-ufo-expert-1.867552?referrerPath=news/updated_city_council_agrees_airport_expansion_plan )

Friday, January 6, 2012

সুপিরিয়র হ্রদ





লেক সুপিরিয়র
 উত্তর আমেরিকার পাঁচটি বৃহত্তম লেকে গুলোর এটির উত্তরেকানাডার প্রদেশ ওন্টারিও, এবং দক্ষিণে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য উইসকনসিন  মিশিগান। এটি আয়তনের দিক দিয়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্বাদু পানির হ্রদএবং একই সাথে এটি ক্ষেত্রফলের দিক দিয়ে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম হ্রদ[২] প্রথম দুইটি হচ্ছে কাস্পিয়ান সাগর  লেক মিশিগান-হিউরন 
ক্ষেত্রফলের দিক দিয়ে লেক সুপিরিয়র বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্বাদু পানির হ্রদ লেক হিউরন, সেন্ট মেরিস রিভার এবং সু লকস-এর মধ্য দিয়ে এটি শেষ হয়েছে। আয়তনের দিক দিয়ে লেক সুপিরিয়র বিশ্বের বৃহত্তম হ্রদ হচ্ছেবৈকাল হ্রদ। এছাড়া কাস্পিয়ান সাগর ক্ষেত্রফল ও আয়তন উভয় দিক থেকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ হ্রদযদিও এর পানি লবণাক্ত। ধারণা করা হয় ঐতিহাসিকভাবে কৃষ্ণ সাগরের মধ্য দিয়ে ভূমধ্যসাগর হয়ে কাস্পিয়ান সাগরের উৎপত্তি 
লেক সুপিরিয়রের ক্ষেত্রফল ৩১,৮২০ বর্গ মাইল ( বর্গ কি.মি.)যা পুরো সাউথ ক্যারোলাইনার থেকেও বড়। এর সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ৩৫০  কি.মি. এবং প্রস্থ ১৬০  কি.মি.। এছাড়াও এর গড় গভীরতা প্রায় ৪৮২ ফুট ,এবং সর্বোচ্চ গভীরতা প্রায় ১,৩৩২ ফুট  লেক সুপিরিয়রের পানির পরিমাণ প্রায় ২,৯০০ ঘন মাইল (১২,১০০ ঘন কিলোমিটার)। লেক সুপিরিয়রের মোট পানি পুরো উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার ভূ-খণ্ডকে ১ ফুট পানির নিচে ঢেকে দিতে পারেহ্রদটির উপকূল এলাকার দৈর্ঘ্য প্রায় ২,৭২৬ mile ( কি.মি.) (দ্বীপগুলো সহ) 

হ্রদটির গড় তাপমাত্রা গ্রীষ্মকালে প্রায় ৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৪০ ডিগ্রি ফারেনটাইন)। এটি গ্রেট লেকসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়, গভীর, এবং শীতলতম হ্রদ। লেক সুপিরিয়রের আয়তন গ্রেট লেকসের বাকি তিনটি হ্রদের মোট আয়তনের চেয়েও বেশি, এবং লেক ইরির প্রায় তিনগুণ।

মিসিগান, হোয়াইট ফিশ পয়েন্ট এবং গ্র্যান্ড মারাইসের মধ্যবর্তী লেক সুপিরিয়রের দক্ষিণ উপকূল "Graveyard of the Great Lakes"  নামে পরিচিত। কারণ এই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি জাহাজডুবি ঘটেছে।
১৮১৮ সাল থেকে লিপিবদ্ধ নথি অনুযায়ী এখানে কমপক্ষে ২৪০ টি জাহাজডুবি ঘটেছে।

১৯৭৫ সালের ১০ নভেম্বর
SS Edmund Fitzgerald নামে একটি জাহাজডুবিতে ২৯ জন নাবিকের সবাই মারা যায়।SS Edmund Fitzgerald 

এখানকার পানি অত্যন্ত ঠাণ্ডা। এখানে ব্যাকটেরিয়ার জন্ম হয় না। ১৯১৩ সালের ৬ থেকে ১১ ডিসেম্বর এখানে প্রলয়ঙ্করী হ্যারিকেনে ২৫০ জনের বেশি লোক নিহত হয়। 
১৯১৩ সালের হ্যারিকেনের খবর সেই সময়ের সংবাদপত্রে
১৯১৮ এর নভেম্বরে এখানে ঝড়ে Inkerman এবং  Cerisoles Minesweepers নামে দুটো ফরাসি জাহাজ ৭৮ জন ক্রু নিয়ে নিখোঁজ হয়।



এদিকে  ভাসমান এক ডাকঘর আছে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে। এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত মিশিগানের বিশাল হ্রদগুলোতে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ কাজ করে। হ্রদ সুপিরিয়র, হ্রদ মিশিগান, হ্রদ হারুন ও হ্রদ এরিতে যাতায়াতকারী জলযানগুলোকে ডাকসুবিধা দেওয়ার জন্য কাজ করছে ভাসমান ডাকঘরটি।ভাসমান ডাকঘর ১৮৯৫ সাল থেকে এ এলাকায় ভাসমান ডাকব্যবস্থার শুরু। এখানে সপ্তাহের প্রতিদিন দিন-রাত চবি্বশ ঘণ্টাই পাওয়া যায় ডাকসুবিধা। ডাক এলে ভাসমান ডাকঘরটি ঘুরে ঘুরে তা পেঁৗছে দেয়। ডাকঘরটি পরিচালনা করছে জেডবি্লউ ওয়েস্টকট কোম্পানি।

Thursday, December 29, 2011

থালিডোমাইড ট্রাজেডি

ষাটের দশকে স্কুলগুলোতে এই ধরনের 
ফকোমালি আক্রান্ত বাচ্চা দেখা যেত। এটা ছিল থালিডোমাইড  ট্রাজেডির ফলাফল


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অনিদ্রা ছিল বিশ্বের প্রধান সমস্যা। থালিডোমাইড তখন আবির্ভূত হয় ঘুমের ঔষধ হিসেবে। সে সময় প্রতি ৭ জন আমেরিকানের ভিতর ১ জন নিয়মিত এই ঔষধ সেবন করত। ইউরোপের বাজারে এই নন বারবিচুরেটটির চাহিদা অনেক বেশি ছিল। তখন এই ঔষধটি বাজার দখল করে নিল।

Over-the-counter remedy হিসেবে এই ঔষধটি ১৯৫৭ তে জার্মান বাজারে প্রবেশ করে। অর্থাৎ প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ঔষধটি কেনা যেত এবং ব্যবহার করা যেত। প্রস্তুতকারীর দাবি ছিল ঔষধটি নিরাপদ এমনকি গর্ভবতী মহিলারাও এটা ব্যবহার করতে পারবেন। প্রস্তুতকারী আরও দাবি করল থালিডোমাইডের এমন কোন ডোস পাওয়া যায় নি যা একটা ইঁদুরকে মারতে পারে। ১৯৬০ সালের ভিতর প্রায় ৪৬ টি দেশে থালিডোমাইড বাজারজাত করা হল। এর বেচাকেনার হার প্রায় অ্যাসপিরিনের কাছাকাছি চলে গেল।

এই সময় অস্ট্রেলিয়ান প্রসুতিবিদ ডা উইলিয়াম মাকব্রাইড আবিষ্কার করলেন থালিডোমাইড গর্ভবতী মহিলাদের মর্নিং সিকনেসে ভালো কাজ করে। এরপর গোটা বিশ্বে থালিডোমাইড গর্ভবতী মহিলাদের মর্নিং সিকনেসের জন্য প্রেসক্রাইব করা শুরু হল।

কিন্তু ১৯৬১ সালে ডা উইলিয়াম মাকব্রাইড নিজেই সন্দেহ করতে লাগলেন এই থালিডোমাইডের সাথে তার হাতে জন্ম নেওয়া সদ্যজাত শিশুদের জন্মগত সমস্যার সম্পর্ক।

১৯৬১ সালে জার্মান সংবাদপত্রগুলো এইরকম ১৬১ টি কেসের কথা জানায় এবং জার্মানি হতে ঔষধটি নিষিদ্ধ  করা হয়। ১৯৬২ সালের মার্চের ভিতর অধিকাংশ দেশ নিষিদ্ধ করে ঔষধটি।


কেউ বলতে পারে না কত বাচ্চা এই ঔষধটির শিকার হয়েছিল। এটা ধারণা করা হয় ১০০০০ হতে পারে এর শিকার।

আমেরিকাতে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ এডমিনিস্ত্রেসনের ফার্মাকোলজিস্ত এবং এমডি
Frances Oldham Kelsey থালিডোমাইডের বাজারজাতকরণ বন্ধ করার নির্দেশ দেন। যদিও থালিডোমাইড আমেরিকাতে সরকারিভাবে বাজারজাত কখনও হয় নাই এটা লক্ষ লক্ষ লোক নিজেরা সংগ্রহ করে খেত।
Kelsey এই কারণে ১৯৬২ সালে জন এফ কেনেডির কাছ থেকে পুরস্কার পান।


১৯৬২ সালে ইউ এস কংগ্রেস আইন পাস করে যে কোন ড্রাগ প্রেগনেন্সিতে ব্যবহারের জন্য বাজারজাতকরনের পূর্বে পরীক্ষা বা ট্রায়াল করে দেখতে হবে।




থালিডোমাইডের ভয়ংকর প্রভাব হচ্ছে
 গর্ভবতী মহিলারা এটি গ্রহন করলে পরে দেখা যায় জন্ম নেওয়া সন্তানদের হবে  ফকোমালি নামক একটি বিকাশবিকৃতিজনিত রোগ বা কঞ্জেনিটাল ডিসিস যেখানে কিনা হাত-পাগুলো হয় স্বাভাবিকের চেয় অনেক ছোট এবং অঙ্গুলগুলোর বিকাশও স্বাভাবিক হয় না, কান ও অন্ত্রের বিকাশও হয় অস্বাভাবিকভ্রুনগতবিকাশবিকৃতির অনুঘটক রাসায়নিককে বলা হয় টেরাটোজেন, এখন প্রশ্ন হচ্ছে থালিডোমাইডের টেরাটোজেনিসিটির উতস কি? দেখা যায় যে, টোটাল সিন্থেসিস প্রক্রিয়ায় কারখানায় সংশ্লেষিত থালিডোমাইড ধারণ করে আর ও এস এনান্টিওমারের অর্ধক অর্ধেক অনুপাত, একটি আইসোমার টার্গেট ইনহিবিট করে এবং অপরটি ইনহিবিট করে সম্পুর্ণই নতুন ও অনাকাঙ্খিত একটি টার্গেট যেই টার্গেটটি কিনা হাত-পা এর বিকাশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে



থালিডমাইড টেরাটোজেন গর্ভধারণের ৩ থেকে ৫ সপ্তাহের মধ্যে, এরপর থালিডমাইড সম্পুর্ণই নিরাপদ

তাই বাজার থেকে তুলে নেওয়া থালিডোমাইড আবার বাজারে প্রবেশের অনুমতি পায় এবং এখন এটি ব্যাবহার হচ্ছে মেলানোমা বা চামড়ার ক্যান্সার চিকিতসায় ১৯৯৮ সালের ১৬ জুন

Tuesday, December 13, 2011

ভিক্টোরিয়া হ্রদ


কাম্পালা, উগান্ডার একটি রিসোর্ট থেকে তোলা ভিক্টোরিয়া হ্রদের ছবি 

বিভিক্টোরিয়া হ্রদ আফ্রিকা মহাদেশের বৃহত্তম এবং পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম হ্রদ । ক্ষেত্রফলের দিক দিয়ে এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশুদ্ধ পানির আধার । তবে গভীরতা তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় এটি পানির আয়তনের দিক দিয়ে বিশ্বে সপ্তম বৃহত্তম  তানজানিয়া , কেনিয়া এবং উগান্ডার মধ্যবর্তী একটি সুউচ্চ মালভূমির উপর এটি অবস্থিত । এ হ্রদে প্রায় ৩০০০ টি ছোট-বড় দ্বীপ রয়েছে যার অনেকগুলোতেই মানব বসতি রয়েছে নীল নদ এর দীর্ঘতম উৎস সাদা নীলের উৎপত্তি এ হ্রদ থেকেই।

ভিক্টোরিয়া তুলনামূলকভাবে নবীন একটি হ্রদ । বর্তমান জলাধারটি সৃষ্টি হয় ৪,০০,০০০ বছর পূর্বে১৭,৩০০ বছর পূর্বে এটি পুরোপুরি শুকিয়ে যায় । ১৪,৭০০ বছর পূর্বে এটি পুনরায় ভরে উঠে।

ভিক্টোরিয়া হ্রদের কথা প্রথম শোনা যায় আরব বণিকদের বিবরণীতে । সোনা হাতির দাঁতের খোঁজে আরবরা আফ্রিকার অভ্যন্তরে নৌপথগুলো ব্যবহার করতো ১১৬০ সালের একটি আরব মানচিত্রে ভিক্টোরিয়া হ্রদকে সুস্পষ্টভাবে সঠিক অবস্থানসহ চিহ্নিত করা হয়। 
১৮৫৮ সালে ব্রিটিশ অভিযাত্রী জন হানিং স্পেক(John Hanning Speke) মধ্য আফ্রিকায় অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে সর্বপ্রথম ইউরোপীয় হিসেবে ভিক্টোরিয়া হ্রদের তীরে উপস্থিত হন । বিশাল জলরাশি দেখে তার মনে হয় এটিই নীল নদের উৎস । মহারাণী ভিক্টোরিয়ার নামানুসারে তিনি এটির নামকরণ করেন  
ব্রিটিশ মিশনারী ও অভিযাত্রী ডেভিড লিভিংস্টোন(David Livingstone) স্পেকের দাবীর সত্যতা যাচাই করতে ব্যর্থ হন । তিনি আরও পশ্চিমে কংগো নদীর কাছে পৌঁছান অবশেষে আমেরিকান আবিষ্কারক হেনরি মরটন স্ট্যানলি(Henry Morton Stanley) এর সত্যতা যাচাই করতে সক্ষম হন।  

স্যাটেলাইট থেকে তোলা ভিক্টোরিয়া হ্রদের ছবি,পশ্চিমে মেঘ ঢাকা কঙ্গোর বনাঞ্চল দেখা যাচ্ছে 


এদিকে এক ধরনের কচুরিপানার ব্যাপক বৃদ্ধির ফলে আফ্রিকার বিখ্যাত ভিক্টোরিয়া হ্রদ সম্পূর্ণ মজে যেতে বসেছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর গোয়েন্দা সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে ব্রাইট জানিয়েছেন, এই কচুরিপানার জন্য ভিক্টোরিয়া হ্রদের পার্শ্ববর্তী তিনটি দেশ কেনিয়া, উগান্ডা এবং তাঞ্জানিয়ায় ব্যাপক মানবিক সঙ্কট দেখা দিতে পারে।
মানবসৃষ্ট ঘটনায় সাম্প্রতিক সময়ে ভিক্টোরিয়া হ্রদের জীব বৈচিত্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ।মৎস্য সম্পদ থেকে আয় বাড়াতে ১৯৫৪ সালে হ্রদে নাইল পার্চ মাছ ছাড়া হয় । ১৯৮০ সালের আগ পর্যন্ত এরা হ্রদে সীমিত আকারে ছিল । কিন্তু পরবর্তী সময়ে এদের ব্যাপক বংশবিস্তার ঘটে । একই সাথে হ্রদে নাইল তেলাপিয়া ছাড়া হয় । বন ধ্বংস করা , অতিরিক্ত জনসংখ্যার পাশাপাশি এ মাছগুলোর আধিক্য হ্রদের জীব বৈচিত্রকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে । বহু অণুজীব প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবার আশংকা রয়েছে ।


ন্যালিউবেল বাঁধ
 ন্যালিউবেল বাঁধঃ ভিক্টোরিয়া হ্রদের একমাত্র বহির্গামী উৎস উগান্ডার জিনজা তে অবস্থিত । প্রাকৃতিক একটি বাঁধের মাধ্যমে বহির্গামী পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রিত হত । ১৯৫২ সালে পানি প্রবাহ বাড়াতে ব্রিটিশ ঔপেনিবেশিক প্রকৌশলীরা প্রাকৃতিক জল সংরক্ষণাগারটি ধ্বংস করে দেন ।
২০০২ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে উগান্ডা নীল নদীতে বাঁধ দিয়ে দ্বিতীয় জল বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করে এরপর হ্রদের পানিস্তরের উচ্চতা ৮০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে আসে । কেনীয় বিশেষজ্ঞরা অনুসন্ধান করে দেখেন চুক্তি ভঙ্গ করে উগান্ডা দ্বিগুণ পরিমাণ পানি ছেড়ে দিচ্ছে  



১৯ শতকের শুরু থেকই লেক ভিক্টোরিয়া ফেরি সার্ভিস তানজানিয়া কেনিয়া এবং উগান্ডার মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম প্রধান বন্দরগুলোর মধ্যে আছে কিসুমো জিনজা পোর্ট বেল  

১৯৯৬ সালের ২১ মে বুকোবা ফেরি ডুবে ৮০০ জন লোক মারা যান। এটি ছিল তানজানিয়ার রেলওয়ে সার্ভিসের ফেরি।

উগান্ডার তানজানিয়ার রেলওয়ে সার্ভিসের ৩টি ফেরি আছে। কাবালেগা,কাও্যা এবং পেমবা।

২০০৫ সালের ৮ মের ভোরবেলা কাবালেগা এবং কাও্যার ভিতর মুখোমুখি সংঘর্ষ হল। সৌভাগ্যবশত কারও ক্ষতি হয়নি।

২০০৬ এর ২৮ এপ্রিল এম ভি ন্যামাগেনি নামে এক কার্গোশিপ ডুবে ২৮ জন নিহত হয়।

২০১০ সালের ৬ আগস্ট ভিক্টোরিয়া হ্রদে তীব্র বাতাসে নৌকা উল্টে গিয়ে তাঞ্জানিয়ার ১৮ জন শিশু নিহত হয়

সূত্রঃ

উইকিপিডিয়া