Make our mind vaster than space

Make our mind vaster than space
Milky Way Galaxy

Friday, August 19, 2011

শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী



লোকনাথ
বাবা শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন জন্মাষ্টমীর দিন ১৭৩০ খ্রিষ্টাব্দে (১৮ ভাদ্র, ১১৩৭ বঙ্গাব্দ) কলকাতা থেকে কিছু দূরে চৌরাশি চাকলা নামক গ্রামে একটি ব্রাহ্মন পরিবারে জন্মগ্রহন করেন তাঁর পিতার নাম রামনারায়ন ঘোষাল এবং তাঁর মাতা কমলাদেবী তিনি ছিলেন তাঁর বাবা মায়ের চতুর্থ পুত্র

মহাজ্ঞানী গুরু ভগবান গাঙ্গুলী লোকনাথ বেনীমাধব উভয়েরই আচার্যগুরু রূপে তাঁদের উপনয়নক্রিয়া সম্পন্ন করে তাঁদের নিয়ে গৃহ ত্যাগ করলেন। গুরু ভগবান গাঙ্গুলী তাঁদের প্রাথমিক শিক্ষাদান আরম্ভ করলেন কালীঘাটে। এই স্থান তখন দীর্ঘ জটাধারী সাধু সন্ন্যাসীতে পরিপূর্ণ। এই দুই বালক মিলে কোনসময় সাধুদের জটা ধরে টানে, কোন সময় তাঁদের নেংটি ধরে টানে এবং সন্ন্যাসীদের ধ্যান ভঙ্গ করে দেয়। বিভিন্ন স্থান ঘুরে তারা পদব্রজে হিমালয়ের দিকে রওনা দেন। বছরের পর বছর নিয়মিত ভাবে গুরুর নির্দেশ মতো লোকনাথের যোগসাধনা চলতে থাকে হিমালয়ের বরফাকৃত নির্জন স্থানে। দীর্ঘ সাধনার পর একদিন লোকনাথ ব্রহ্মদর্শন করলেন এবং তিনি সিদ্ধিলাভ করলেন। যোগী ব্রহ্মচারী লোকনাথ ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করলেন। সার্থক গুরু মহাজ্ঞানী ভগবান গাঙ্গুলী তাঁর শিষ্যদের নিয়ে মহাতীর্থ কাশীধামে আসেন এবং এখানেই মণিকর্ণিকার ঘাটে মহাজপে উপবিষ্ট অবস্থায় গুরু ভগবান দেহত্যাগ করেন। ব্রহ্মজ্ঞানী মহাপুরুষ শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী বাবার দেশভ্রমণ শুরু হল এবং বিভিন্ন স্থান ঘুরে তিনি উপস্থিত হলেন মুসলমানদের তীর্থস্থান মক্কা মদিনা দর্শনে। হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ খ্রীষ্টান সব ধর্মের লোকরাই তার কাছে সমান।

লোকনাথ পশ্চিম দিকে দিয়ে আফগানিস্তান, মক্কা, মদিনা ইত্যাদি স্থান অতিক্রম করে আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূল পর্যন্ত গমন করেছিলেন। মক্কাদেশীয় মুসলিম জনগোষ্ঠী তাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন।  এখানে আবদুল গফুর নামে এক মহাপুরুষের দর্শন লাভ করেন এবং লোকনাথ বাবা দিন কয়েক তাঁর সংসর্গে কাটান। লোকনাথ বাবা বলেছেন, "আমি মক্কায় আবদুল গফুর নামে এক ব্রাহ্মন দেখেছি। ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থান যেমন হরিদ্বার, বদ্রীনাথ, কেদারনাথ, গঙ্গোত্রী প্রভৃতি ছাড়াও আফগানিস্থান, পারস্য, আরবদেশ, গ্রীস, তুরস্ক, ইতালি, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড ঘুরে লোকনাথ বাবা আবার ভারতে ফেরেন পরে তিনি বেণীমাধবকে সাথে নিয়ে উত্তরের পথে গমন করেন। তারা সুমেরু এলাকা গমনের ইচ্ছায় প্রাক-প্রস্তুতি উপলক্ষে শৈত্যপ্রধান এলাকা হিসেবে বদরিকা আশ্রমে অবস্থান করে সেখান থেকে আধুনিক পরিজ্ঞাত সীমা অতিক্রম করে উত্তরে বহুদূরে চলে যান। সেখানে সূর্যোদয় না হওয়ায় সময় নির্ণয় করা যায় নাই; তবে তারা সে পথে ২০ বার বরফ পড়তে গলতে দেখেছিলেন। শেষে হিমালয় শৃঙ্গে বাঁধা পেয়ে তারা পূর্ব দিকে গমন করে চীন দেশে উপস্থিত হন এবং মাস বন্দী থেকে মুক্তিলাভ করেন। তারপর উভয়ে চন্দ্রনাথে আগমন করে কিছুকাল থেকে বেণীমাধব কামাখ্যায় এবং লোকনাথ বারদী গ্রামে গমন করে বাস করতে থাকে। সে সময় থেকেইবারদী ব্রহ্মচারীহিসেবে লোকনাথ পরিচিতি পান


 �কাশীধামের "শ্রী শ্রী তৈলঙ্গস্বামীই মহাপুরুষ হিতলাল মিশ্র যাঁর হাতে প্রিয় শিষ্যদের ভার সমর্পণ করে গুরু ভগবান দেহত্যাগ করেন। ওনার কথায় এবার লোকনাথ বাবা নিম্নভূমিতে যাত্রা করেন। লোকনাথ বাবা আসাম হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। চন্দ্রনাথ পাহাড়ে শ্রীমপাহাড়ে শ্রীমবিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী হঠাভীষণ দাবানলের মধ্যে আটকে পড়েন এবং লোকনাথ বাবা তাকে উদ্ধার করেন। চন্দ্রনাথ পাহাড়ে অবস্থান কালে এক বাঘিনী দয়ালু লোকনাথ বাবার কাছে তার শাবকদের নিরাপদে রেখে শিকারে যেত। এখান থেকে বেনীমাধব লোকনাথ পৃথক হয়ে নিজ নিজ কর্মপথে চললেন। ত্রিপুরা জেলার দাউদকান্দি গ্রামে এক বৃক্ষের ছায়ায় বাবা অবস্থান করেন। সামনে দিয়ে অনেক লোক যায়, কেউ বা তাঁকে দেখে পাগল ভাবে কেউ আবার ফলমূল দেয়। অপরাধী ডেঙ্গু কর্মকার যার বিচারে প্রাণদন্ড হওয়ার কথা। বাবার স্মরণে আসলে বাবা বললেন তুই মুক্তি পাবি এবং পরদিন বিচারে সে নিদোর্ষ বলে খালাস পায়। ডেঙ্গুর অনুরোধে লোকনাথ বাবা বারদী গ্রামে আসতে রাজি হন। বারদীতে সকলেই লোকনাথ বাবাকে নীচ জাতি, পাগল অপবিত্র বলে মনে করে। একদিন কয়েকজন ব্রাহ্মণ গ্রন্থি দিতে গিয়ে তাদের পৈতেতে জট ফেলেছেন আর খুলতে পারছেন না। লোকনাথ বাবা তাঁদের দিকে যেতেই তারা রেগে তাকে দূর হয়ে যেতে বললেন। বাবা কিন্তু হাসিমুখে তাদের বললেন তর্ক না করে তোমাদের গোত্র বল। গোত্র শুনে বাবার গায়ত্রী জপে সব জট খুলে গেল। সাধুরা বুঝলেন ইনি কোনো মহাপুরুষ হবেন এবং লোকমুখে বাবার প্রচার শুরু হয়ে গেল। বারদীর জমিদার নাগ মহাশয় বাবার পছন্দ করা স্থানে বাবার জন্য আশ্রম করে দিলেন। আশ্রমের পাশে থাকতেন এক গোয়ালিনী মা তিনি প্রতিদিন বাবার জন্য দুধ আনতেন। লোকনাথ বাবা তাঁকে মায়ের মর্যাদা দিয়ে আশ্রমে থাকতে বললেন।যোগবলে লোকনাথ বাবা জেনেছিলেন যে পূর্ব জনমে এই গোয়ালিনী মা ছিলেন তাঁর প্রকৃত মা। শ্রী বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী নৌকা চড়ে বাবার আশ্রমে আসছেন, বাবা যোগবলে জানতে পারেন এবং ভক্তদের বলেন তাকে সমতলে নিয়ে আসতে। বিজয়কৃষ্ণকে দেখে বাবা খুবই আনন্দ পেলেন এবং বিজয়কৃষ্ণ বিস্মিত হয়ে দেখলেন লোকনাথকে ঘিরে দেব দেবীরা বিরাজ করছেন। বাবা তাকে বুকে তুলে নিলেন এবং পাকা বেলের উচ্ছিষ্ট তাকে প্রসাদ দিলেন। বারদীর আশ্রমের নাম প্রসিদ্ধ হলো এবং তীর্থ স্থান রূপে গণ্য হলো। "শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী" বাবার আশ্রমে প্রতিনিয়ত ভক্তের সমাগম বাড়তে থাকে এবং সাধারণ লোকজন অনেক জ্ঞানী-মহাজ্ঞানী, রাজা মহারাজারা বাবার দর্শন আশীর্বাদ এর জন্য আসতে থাকেন। একদিন ভাওয়ালের রাজা রাজেন্দ্র নারায়ণ রায় বাহাদুর লোকনাথ বাবার একটি ছবি তোলার অনুমতি চাইলেন। বাবা প্রশ্ন করেন যে তাঁর ছবি দিয়ে কি হবে। ভাওয়ালের রাজা বলেন যে তাঁর ছবি সাধারণ মানুষ এবং বাবার ভক্তদের প্রয়োজনে লাগবে, প্রতি ঘরে ঘরে পূজিত হবে। বাবা অনুমতি দেন এবং তিনি একটি মাত্র ছবি তোলেন। বাবার একখানি ছবি থেকেই তৈরী বাবার বিভিন্ন ছবি আজ আমরা দেখতে পাই এবং সংগ্রহ করি। বাবার কৃপায় অসংখ্য মানুষ উপকৃত হতে থাকেন। বাবার আশীর্বাদে ভক্তদের দুঃখ কষ্ট দূর হয়ে যায়, বাবার ভক্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে, ঘরে ঘরে বাবার পূজো শুরু হয়। ১৯ জ্যৈষ্ঠ রবিবার, আকাশ সম্পূর্ণ পরিস্কার। বাবা আগেই আশ্রমের সবাইকে সকাল নয়টার মধ্যে আহার করে নিতে বলেছেন। মা আজও পুত্রের জন্য বাল্যভোগ প্রস্ত্তত করলেন।বাবা নিজের হাতে খেয়ে প্রসাদ করে ভক্তদের দিলেন। আশ্রমের সকলের আহারাদি শেষ। বাবা বেলা ১১-৪০ মিনিটে মহাযোগে উপবেশন করলেন। দেহত্যাগের মাধ্যমে তিনি তাঁর স্থূল দেহ ত্যাগ করে সূত্র দেহ ধারণ করে, ত্রিলোকে বিরাজ রইলেন।


Source:
1.wikipedia
2. internet

No comments:

Post a Comment