Make our mind vaster than space

Make our mind vaster than space
Milky Way Galaxy

Thursday, December 29, 2011

থালিডোমাইড ট্রাজেডি

ষাটের দশকে স্কুলগুলোতে এই ধরনের 
ফকোমালি আক্রান্ত বাচ্চা দেখা যেত। এটা ছিল থালিডোমাইড  ট্রাজেডির ফলাফল


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অনিদ্রা ছিল বিশ্বের প্রধান সমস্যা। থালিডোমাইড তখন আবির্ভূত হয় ঘুমের ঔষধ হিসেবে। সে সময় প্রতি ৭ জন আমেরিকানের ভিতর ১ জন নিয়মিত এই ঔষধ সেবন করত। ইউরোপের বাজারে এই নন বারবিচুরেটটির চাহিদা অনেক বেশি ছিল। তখন এই ঔষধটি বাজার দখল করে নিল।

Over-the-counter remedy হিসেবে এই ঔষধটি ১৯৫৭ তে জার্মান বাজারে প্রবেশ করে। অর্থাৎ প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ঔষধটি কেনা যেত এবং ব্যবহার করা যেত। প্রস্তুতকারীর দাবি ছিল ঔষধটি নিরাপদ এমনকি গর্ভবতী মহিলারাও এটা ব্যবহার করতে পারবেন। প্রস্তুতকারী আরও দাবি করল থালিডোমাইডের এমন কোন ডোস পাওয়া যায় নি যা একটা ইঁদুরকে মারতে পারে। ১৯৬০ সালের ভিতর প্রায় ৪৬ টি দেশে থালিডোমাইড বাজারজাত করা হল। এর বেচাকেনার হার প্রায় অ্যাসপিরিনের কাছাকাছি চলে গেল।

এই সময় অস্ট্রেলিয়ান প্রসুতিবিদ ডা উইলিয়াম মাকব্রাইড আবিষ্কার করলেন থালিডোমাইড গর্ভবতী মহিলাদের মর্নিং সিকনেসে ভালো কাজ করে। এরপর গোটা বিশ্বে থালিডোমাইড গর্ভবতী মহিলাদের মর্নিং সিকনেসের জন্য প্রেসক্রাইব করা শুরু হল।

কিন্তু ১৯৬১ সালে ডা উইলিয়াম মাকব্রাইড নিজেই সন্দেহ করতে লাগলেন এই থালিডোমাইডের সাথে তার হাতে জন্ম নেওয়া সদ্যজাত শিশুদের জন্মগত সমস্যার সম্পর্ক।

১৯৬১ সালে জার্মান সংবাদপত্রগুলো এইরকম ১৬১ টি কেসের কথা জানায় এবং জার্মানি হতে ঔষধটি নিষিদ্ধ  করা হয়। ১৯৬২ সালের মার্চের ভিতর অধিকাংশ দেশ নিষিদ্ধ করে ঔষধটি।


কেউ বলতে পারে না কত বাচ্চা এই ঔষধটির শিকার হয়েছিল। এটা ধারণা করা হয় ১০০০০ হতে পারে এর শিকার।

আমেরিকাতে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ এডমিনিস্ত্রেসনের ফার্মাকোলজিস্ত এবং এমডি
Frances Oldham Kelsey থালিডোমাইডের বাজারজাতকরণ বন্ধ করার নির্দেশ দেন। যদিও থালিডোমাইড আমেরিকাতে সরকারিভাবে বাজারজাত কখনও হয় নাই এটা লক্ষ লক্ষ লোক নিজেরা সংগ্রহ করে খেত।
Kelsey এই কারণে ১৯৬২ সালে জন এফ কেনেডির কাছ থেকে পুরস্কার পান।


১৯৬২ সালে ইউ এস কংগ্রেস আইন পাস করে যে কোন ড্রাগ প্রেগনেন্সিতে ব্যবহারের জন্য বাজারজাতকরনের পূর্বে পরীক্ষা বা ট্রায়াল করে দেখতে হবে।




থালিডোমাইডের ভয়ংকর প্রভাব হচ্ছে
 গর্ভবতী মহিলারা এটি গ্রহন করলে পরে দেখা যায় জন্ম নেওয়া সন্তানদের হবে  ফকোমালি নামক একটি বিকাশবিকৃতিজনিত রোগ বা কঞ্জেনিটাল ডিসিস যেখানে কিনা হাত-পাগুলো হয় স্বাভাবিকের চেয় অনেক ছোট এবং অঙ্গুলগুলোর বিকাশও স্বাভাবিক হয় না, কান ও অন্ত্রের বিকাশও হয় অস্বাভাবিকভ্রুনগতবিকাশবিকৃতির অনুঘটক রাসায়নিককে বলা হয় টেরাটোজেন, এখন প্রশ্ন হচ্ছে থালিডোমাইডের টেরাটোজেনিসিটির উতস কি? দেখা যায় যে, টোটাল সিন্থেসিস প্রক্রিয়ায় কারখানায় সংশ্লেষিত থালিডোমাইড ধারণ করে আর ও এস এনান্টিওমারের অর্ধক অর্ধেক অনুপাত, একটি আইসোমার টার্গেট ইনহিবিট করে এবং অপরটি ইনহিবিট করে সম্পুর্ণই নতুন ও অনাকাঙ্খিত একটি টার্গেট যেই টার্গেটটি কিনা হাত-পা এর বিকাশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে



থালিডমাইড টেরাটোজেন গর্ভধারণের ৩ থেকে ৫ সপ্তাহের মধ্যে, এরপর থালিডমাইড সম্পুর্ণই নিরাপদ

তাই বাজার থেকে তুলে নেওয়া থালিডোমাইড আবার বাজারে প্রবেশের অনুমতি পায় এবং এখন এটি ব্যাবহার হচ্ছে মেলানোমা বা চামড়ার ক্যান্সার চিকিতসায় ১৯৯৮ সালের ১৬ জুন

Tuesday, December 13, 2011

ভিক্টোরিয়া হ্রদ


কাম্পালা, উগান্ডার একটি রিসোর্ট থেকে তোলা ভিক্টোরিয়া হ্রদের ছবি 

বিভিক্টোরিয়া হ্রদ আফ্রিকা মহাদেশের বৃহত্তম এবং পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম হ্রদ । ক্ষেত্রফলের দিক দিয়ে এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশুদ্ধ পানির আধার । তবে গভীরতা তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় এটি পানির আয়তনের দিক দিয়ে বিশ্বে সপ্তম বৃহত্তম  তানজানিয়া , কেনিয়া এবং উগান্ডার মধ্যবর্তী একটি সুউচ্চ মালভূমির উপর এটি অবস্থিত । এ হ্রদে প্রায় ৩০০০ টি ছোট-বড় দ্বীপ রয়েছে যার অনেকগুলোতেই মানব বসতি রয়েছে নীল নদ এর দীর্ঘতম উৎস সাদা নীলের উৎপত্তি এ হ্রদ থেকেই।

ভিক্টোরিয়া তুলনামূলকভাবে নবীন একটি হ্রদ । বর্তমান জলাধারটি সৃষ্টি হয় ৪,০০,০০০ বছর পূর্বে১৭,৩০০ বছর পূর্বে এটি পুরোপুরি শুকিয়ে যায় । ১৪,৭০০ বছর পূর্বে এটি পুনরায় ভরে উঠে।

ভিক্টোরিয়া হ্রদের কথা প্রথম শোনা যায় আরব বণিকদের বিবরণীতে । সোনা হাতির দাঁতের খোঁজে আরবরা আফ্রিকার অভ্যন্তরে নৌপথগুলো ব্যবহার করতো ১১৬০ সালের একটি আরব মানচিত্রে ভিক্টোরিয়া হ্রদকে সুস্পষ্টভাবে সঠিক অবস্থানসহ চিহ্নিত করা হয়। 
১৮৫৮ সালে ব্রিটিশ অভিযাত্রী জন হানিং স্পেক(John Hanning Speke) মধ্য আফ্রিকায় অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে সর্বপ্রথম ইউরোপীয় হিসেবে ভিক্টোরিয়া হ্রদের তীরে উপস্থিত হন । বিশাল জলরাশি দেখে তার মনে হয় এটিই নীল নদের উৎস । মহারাণী ভিক্টোরিয়ার নামানুসারে তিনি এটির নামকরণ করেন  
ব্রিটিশ মিশনারী ও অভিযাত্রী ডেভিড লিভিংস্টোন(David Livingstone) স্পেকের দাবীর সত্যতা যাচাই করতে ব্যর্থ হন । তিনি আরও পশ্চিমে কংগো নদীর কাছে পৌঁছান অবশেষে আমেরিকান আবিষ্কারক হেনরি মরটন স্ট্যানলি(Henry Morton Stanley) এর সত্যতা যাচাই করতে সক্ষম হন।  

স্যাটেলাইট থেকে তোলা ভিক্টোরিয়া হ্রদের ছবি,পশ্চিমে মেঘ ঢাকা কঙ্গোর বনাঞ্চল দেখা যাচ্ছে 


এদিকে এক ধরনের কচুরিপানার ব্যাপক বৃদ্ধির ফলে আফ্রিকার বিখ্যাত ভিক্টোরিয়া হ্রদ সম্পূর্ণ মজে যেতে বসেছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর গোয়েন্দা সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে ব্রাইট জানিয়েছেন, এই কচুরিপানার জন্য ভিক্টোরিয়া হ্রদের পার্শ্ববর্তী তিনটি দেশ কেনিয়া, উগান্ডা এবং তাঞ্জানিয়ায় ব্যাপক মানবিক সঙ্কট দেখা দিতে পারে।
মানবসৃষ্ট ঘটনায় সাম্প্রতিক সময়ে ভিক্টোরিয়া হ্রদের জীব বৈচিত্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ।মৎস্য সম্পদ থেকে আয় বাড়াতে ১৯৫৪ সালে হ্রদে নাইল পার্চ মাছ ছাড়া হয় । ১৯৮০ সালের আগ পর্যন্ত এরা হ্রদে সীমিত আকারে ছিল । কিন্তু পরবর্তী সময়ে এদের ব্যাপক বংশবিস্তার ঘটে । একই সাথে হ্রদে নাইল তেলাপিয়া ছাড়া হয় । বন ধ্বংস করা , অতিরিক্ত জনসংখ্যার পাশাপাশি এ মাছগুলোর আধিক্য হ্রদের জীব বৈচিত্রকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে । বহু অণুজীব প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবার আশংকা রয়েছে ।


ন্যালিউবেল বাঁধ
 ন্যালিউবেল বাঁধঃ ভিক্টোরিয়া হ্রদের একমাত্র বহির্গামী উৎস উগান্ডার জিনজা তে অবস্থিত । প্রাকৃতিক একটি বাঁধের মাধ্যমে বহির্গামী পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রিত হত । ১৯৫২ সালে পানি প্রবাহ বাড়াতে ব্রিটিশ ঔপেনিবেশিক প্রকৌশলীরা প্রাকৃতিক জল সংরক্ষণাগারটি ধ্বংস করে দেন ।
২০০২ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে উগান্ডা নীল নদীতে বাঁধ দিয়ে দ্বিতীয় জল বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করে এরপর হ্রদের পানিস্তরের উচ্চতা ৮০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে আসে । কেনীয় বিশেষজ্ঞরা অনুসন্ধান করে দেখেন চুক্তি ভঙ্গ করে উগান্ডা দ্বিগুণ পরিমাণ পানি ছেড়ে দিচ্ছে  



১৯ শতকের শুরু থেকই লেক ভিক্টোরিয়া ফেরি সার্ভিস তানজানিয়া কেনিয়া এবং উগান্ডার মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম প্রধান বন্দরগুলোর মধ্যে আছে কিসুমো জিনজা পোর্ট বেল  

১৯৯৬ সালের ২১ মে বুকোবা ফেরি ডুবে ৮০০ জন লোক মারা যান। এটি ছিল তানজানিয়ার রেলওয়ে সার্ভিসের ফেরি।

উগান্ডার তানজানিয়ার রেলওয়ে সার্ভিসের ৩টি ফেরি আছে। কাবালেগা,কাও্যা এবং পেমবা।

২০০৫ সালের ৮ মের ভোরবেলা কাবালেগা এবং কাও্যার ভিতর মুখোমুখি সংঘর্ষ হল। সৌভাগ্যবশত কারও ক্ষতি হয়নি।

২০০৬ এর ২৮ এপ্রিল এম ভি ন্যামাগেনি নামে এক কার্গোশিপ ডুবে ২৮ জন নিহত হয়।

২০১০ সালের ৬ আগস্ট ভিক্টোরিয়া হ্রদে তীব্র বাতাসে নৌকা উল্টে গিয়ে তাঞ্জানিয়ার ১৮ জন শিশু নিহত হয়

সূত্রঃ

উইকিপিডিয়া 
 

Sunday, December 11, 2011

হাসপাতালে আগুন দেশে দেশে


৯ ডিসেম্বর ২০১১।



সারা বিশ্ব আতঙ্ক হয়ে দেখল
দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ার এএমআরআই হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়। একের পর একে লাশ বের করছে উদ্ধারকর্মীরা। অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ৯০ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছেআহত হয়েছেন আরও অনেকেনিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন বাংলাদেশিও আছেন নিহত বাংলাদেশির নাম গৌরাঙ্গ মণ্ডল (৬৫)তাঁর বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলায়স্নায়ুজাত রোগের চিকিৎসার জন্য গত বুধবার তিনি ওই হাসপাতালে ভর্তি হনতাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলকাতায় বাংলাদেশি উপহাইকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমানতিনি জানান, লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের পরিদর্শনের পর কলকাতার ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতাল সিল করে দিয়েছে রাজ্য সরকারপরিদর্শনের পর তাঁরা বলেন, বেসমেন্ট থেকেই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাততদন্তের স্বার্থে তাঁরা সেখান থেকে বেশ কিছু নমুনাও সংগ্রহ করেনএরই মধ্যে হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে 


যারা সুস্থ হতে এসেছিল হাসপাতালে তারাই মারা গেল হাসপাতালে। বিশ্বে এ ধরনের অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে।

১৯৪২ সালের ৯ ডিসেম্বর নিউজিল্যান্ডের সিক্লিফ মানসিক হাসপাতালে আগুন লেগে মারা যায় ৩৭ জন। 
১৯৫০ সালে আমেরিকার একটি হাসপাতালে আগুন লেগে মারা যায় ৪১ জন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে হাসপাতালে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল গুয়াতেমালায় ১৪ জুলাই, ১৯৬০-এ. গুয়াতেমালার মানসিক হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে মারা যান ২৫ জন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়ের সেন্ট অ্যান্টনিজ হাসাপাতালে বিধ্বংসী আগুন. মৃত্যু হয় কমপক্ষে ৭৪ জনের
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরই মিসৌরিতে ওয়ারেংটন নার্সিং হোমে আগুন লেগেছিল ১৯৫৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সেই অগ্নিকাণ্ডে বলি হন ৭২ জন
১৯৭১ সালে সুইজারল্যান্ডের মানসিক ক্লিনিকে আগুন লেগে মারা যায় ২৮ জন।
১৯৯৪ এর ডিসেম্বর মাসে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াতে সাউথসাইড  হাসপাতালে আগুন লেগে মারা যায় ৪ জন।
১৯৯৮ সালের ১৬ মে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলাতে হাসপাতালে আগুন লেগে মারা যায় ২০ জন।
১৯৯৯ সালের রাশিয়ার লেনিনগ্রাডে অবলাস্ট হাসপাতালের
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২১ জন মারা যায়।
২০০৩ সালের ১২ অক্টোবর বেলারুশে মানসিক হাসপাতালে আগুনে ৩০ জন মারা যায়।
২০০৫ সালের ২৪ জানুয়ারি দক্ষিণ ইরাকের নাসিরিয়ায় হাসপাতালে আগুন লেগে মারা যায় ১৪ জন।
২০০৫ সালের ১২ জুলাই কোস্টারিকায় হাসপাতালে আগুন লেগে মারা যায় ১৮ জন।
২০০৬ সালে চীনে হাসপাতালে আগুনের ঘটনায় ২৭ জন নিহত হয়।
হাসপাতালে ভয়াবহ আগুনের সাম্প্রতিকতম দুর্ঘটনাটি ঘটে মস্কোয়. ২০০৬ সালেআগুন লাগে ড্রাগ রিহ্যাব হাসপাতালে. মারা যান অন্তত ৪৫ জন