Make our mind vaster than space

Make our mind vaster than space
Milky Way Galaxy

Sunday, October 16, 2011

হর্সহেড নীহারিকা


হর্সহেড নীহারিকা



নীহারিকা
ধূলিকণা, হাইড্রোজেন গ্যাস এবং প্লাসমা দ্বারা গঠিত এক ধরণের আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘএকসময় নীহারিকা ছিল ছায়াপথ সহ যে কোন ধরণের বিস্তৃত জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তুর সাধারণ নাম যা আকাশগঙ্গার বাইরে অবস্থিতযেমন:বর্তমানে উল্লেখিত এনড্রোমিডা ছায়াপথের পূর্ব নাম ছিল এনড্রোমিডা নীহারিকা

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর নক্ষত্রলোক নামক রচনায় লিখেছেন,
রাত্রের আকাশে মাঝে মাঝে নক্ষত্রপুঞ্জের সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায় লেপে দেওয়া আলোতাদের নাম দেওয়া হয়েছে নীহারিকাএদের মধ্যে কতকগুলি সুদূরবিস্তৃত অতি হালকা গ্যাসের মেঘ, আবার কতকগুলি নক্ষত্রের সমাবেশদুরবীনে এবং ক্যামেরার যোগে জানা গেছে যে, যে-ভিড় নিয়ে এই শেষোক্ত নীহারিকা, তাতে যত নক্ষত্র জমা হয়েছে, বহু কোটি তার সংখ্যা, অদ্ভূত দ্রুত তাদের গতিএই যে নক্ষত্রের ভিড় নীহারিকামণ্ডলে অতি দ্রুতবেগে ছুটছে, এরা পরস্পর ধাক্কা লেগে চুরমার হয়ে যায় না কেনউত্তর দিতে গিয়ে চৈতন্য হল এই নক্ষত্রপুঞ্জকে ভিড় বলা ভুল হয়েছেএদের মধ্যে গলাগলি ঘেঁষাঘেঁষি একেবারেই নেইপরস্পরের কাছ থেকে অত্যন্তই দূরে দূরে চলাফেরা করছেপরমাণুর অন্তর্গত ইলেকট্রনদের গতিপথের দূরত্ব সম্বন্ধে স্যর জেমস্‌ জীন্‌স্‌ যে উপমা দিয়েছেন এই নক্ষত্রমণ্ডলীর সম্বন্ধেও অনুরূপ উপমাই তিনি প্রয়োগ করেছেনলণ্ডনে ওয়াটর্লু নামে এক মস্ত স্টেশন আছেযতদূর মনে পড়ে সেটা হাওড়া স্টেশনের চেয়ে বড়োইস্যর জেম্‌স জীন্‌স্‌ বলেন সেই স্টেশন থেকে আর-সব খালি করে ফেলে কেবল ছ'টি মাত্র ধুলোর কণা যদি ছড়িয়ে দেওয়া যায় তবে আকাশে নক্ষত্রদের পরস্পর দূরত্ব এই ধূলিকণাদের বিচ্ছেদের সঙ্গে কিছু পরিমাণে তুলনীয় হতে পারবেতিনি বলেন, নক্ষত্রের সংখ্যা ও আয়তন যতই হোক আকাশের অচিন্তনীয় শূণ্যতার সঙ্গে তার তুলনাই হতে পারে না
বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন, সৃষ্টিতে রূপবৈচিত্রের পালা আরম্ভ হবার অনেক আগে কেবল ছিল একটা পরিব্যাপ্ত জ্বলন্ত বাষ্পগরম জিনিস মাত্রেরই ধর্ম এই যে ক্রমে ক্রমে সে তাপ ছড়াতে থাকেফুটন্ত জল প্রথমে বাষ্প হয়ে বেরিয়ে আসেঠাণ্ডা হতে হতে সেই বাষ্প জমে হয় জলের কণাঅত্যন্ত তাপ দিলে কঠিন পদার্থও ক্রমে যায় গ্যাস হয়ে; সেইরকম তাপের অবস্থায় বিশ্বের হালকা ভারী সব জিনিসই ছিল গ্যাসকোটি কোটি বছর ধরে কালে কালে তা ঠাণ্ডা হচ্ছেতাপ কমতে কমতে গ্যাস থেকে ছোটো ছোটো টুকরো ঘন হয়ে ভেঙে পড়েছেএই বিপুলসংখ্যক কণা তারার আকারে জোট বেঁধে নীহারিকা গড়ে তুলেছেয়ুরোপীয় ভাষায় এদের বলে নেব্যুলা, বহুবচনে নেব্যুলীআমাদের সূর্য আছে এইরকম একটি নীহারিকার অন্তর্গত হয়ে
ওয়িলিয়ামিয়া ফ্লেমিং
 


হর্সহেড নীহারিকা  কালপুরুষ/ওরিয়ন মণ্ডলে অবস্থিত একটি অন্ধকার নীহারিকা। এটি জেটা অরিয়নিস (Alnitak - ঊষা) তারার ঠিক দক্ষিণে অবস্থিত। এটি কালপুরুষের Orion Molecular Cloud Complex এর অংশ।
এটি পৃথিবী হতে ১৫০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এটি দেখতে ঘোড়ার মাথার মত তাই একে দূরবীনে সহজে সনাক্ত করা যায়। ওয়িলিয়ামিয়া ফ্লেমিং নামে এক মহিলা জ্যোতির্বিজ্ঞানী ১৮৮৮ সালে হারভাড  কলেজ  অভজারভেটরি  এই নীহারিকাটি আবিষ্কার করেন।



ছবিতে দেখুন লাল আভা হচ্ছে হাইড্রোজেন গ্যাস যা নীহারিকাটির পিছনে অবস্থিত। এই গ্যাস নিকটবর্তী তারা সিগমা
অরিয়নিস দ্বারা আয়নিত। হর্স হেডের অন্ধকার অংশের জন্য ধূলিকণা দায়ী। গ্যাসের প্রবাহ এক শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্র তৈরি করেছে। উজ্জ্বল আলোকবিন্দুগুলো নতুন তারার যারা জন্ম নিচ্ছে এই কালো নীহারিকা হতে।



২০০১ সালে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ ইন্সটিউট ভোটের ব্যবস্থা করে। বিষয় ছিল এমন একটি মহাজাগতিক বস্তুকে ভোট দিতে হবে যা হাবল স্পেস টেলিস্কোপ পর্যবেক্ষণ করবে। হর্সহেড নীহারিকা নিরুঙ্কুশ বিজয়ী হয়। 

No comments:

Post a Comment